বাংলা ছোট গল্প বিষ - ২য় পাঠ

 #গল্প_বিষ

২য় পাঠ

 




#গল্প_বিষ

পর্বঃ ০২ এবং শেষপর্ব

 

অনেকক্ষণ হ্যালো হ্যালো করার পর সিয়াম তাকিয়ে দেখলো নেট সমস্যা।

শীতের রাতে কম্বলের নিচে কথা বলা টা কষ্টকর।

আর কম্বলের নিচে কথা বলতে গেলে মাঝে মাঝে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে।

সিয়াম তাড়াহুড়া করে গায়ে শীতের চাদর জড়িয়ে রুমের বাহিরে চলে গেল।

হিমেল হাওয়াতে দাঁতে দাঁত ঠকঠক করা অবস্থায় ফোন দিতে গিয়ে দেখলো,

নেহা অলরেডী ফোন দিয়েছে আগেই।

সিয়ামঃ হ্যালো...।।

নেহাঃ জ্বি শুনতে পাচ্ছি...।।

সিয়ামঃ নেট সমস্যা ।

তাই বাহিরে এসেছি।

নেহাঃ ফিক করে হেঁসে বলল,আমিও লেপের বাহিরে এসেছি।

সিয়ামঃ বাহ বাহ দুইজনের একি অবস্থা।

নেহাঃ আচ্ছা শুনুন আপাতত আপনার পিংক কালারের বিষ খাওয়ার ইচ্ছা চলে গিয়েছে।

কারন আপনি ইচ্ছা করে এমন বিষ দিয়েছেন।

সিয়ামঃ হা হা হম এত আমি ইচ্ছা করেই দিয়েছি।

এত সুন্দর মানুষ এত আর্লি ইচ্ছা করে মারা গেলে হয়,

আর আপনি কেন মারা যেতে চান সে টা বলুন।

নেহাঃ আপাতত বলব না,পরে কোন একদিন বলব।

সিয়ামঃ আচ্ছা আপনার কি কি পছন্দ...???

নেহাঃ পিংক কালারের ড্রেস,পিংক কালারের নেইল পলিশ,পিংক কালারের টিপ,পিংক কালারের লিপিটিষ্ট, পিংক কালারের চুড়ি,পিংক কালারের আলতা,পিংক কালারের জুতা...।।

আর সবচেয়ে বেশী ভালবাসি মেহেদী দিয়ে দুই হাত লাল করতে।

সিয়ামঃ থামুন থামুন আমি পিংক কালারের পানি খেয়ে আসি।

আল্লাহ একটা মানুষের এত পিংক কালার কিভাবে পছন্দ হয়।

নেহাঃ আপাতত পিংক কালারের বিষ এবং পিংক কালারের বিষের মালিক কেউ খারাপ লাগছে না।

সিয়ামঃ প্লিজ দয়া করে এখন আমাকে পিংক কালার হতে বলবেন না।

আমার দোকানে  পিংক কালার নাই,যেটা আমার গায়ে মেখে পিংক কালারের মানুষ সাজবো।

নেহা কথা শুনে আবার হাঁসা শুরু করল।

মেয়ে টার সাথে যত কথা হচ্ছে,

সিয়াম ততই অবাক হয়ে যাচ্ছে।

 

নেহাঃ শুনুন কাল আমি আপনার পিংক কালারের বিষের দাম দিতে আসবো।কত টাকা সে টা আগেই বলুন।

ওহ আরেক টা ব্যাপার,আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

অবশ্য সামনে গিয়ে দিতে চেয়েছিলাম।

সিয়ামঃ বলুন তো আমাকে কেন ধন্যবাদ দিচ্ছেন?

নেহাঃ আসলে আমার বিয়ের কথা হচ্ছিল,কিন্তু আমি এখনো পড়াশুনা করছি।কিন্তু বাসা থেকে বিয়ের ব্যাপারে বলেছে...!!!

যদিও বলেছে আমার যদি পছন্দ থাকে তার সাথেই দিবে কিন্তু আমি বিয়ের ব্যাপারে মোটেও রাজি না।।

সেদিন প্রচন্ড রাগ হচ্ছিল ,সত্যি সত্যি যদি বিষ থাকতো তাহলে খেয়ে ফেলতাম...!!!

আপাতত বিয়ের ব্যাপারে আর কোন কথা বলছে না।

বলছে আমার যেদিন যাকে পছন্দ হবে সেদিন তার সাথে বিয়ে হবে।

কিন্তু আপনার সাথে কথা বলতে চাইলাম রাগ বাড়ানোর জন্য কিন্তু আপনি এত ফ্যানি একটা মানুষ কথা না বললে বুঝতে পারতাম না।

সিয়ামঃ যাক তাহলে ভালই করেছি।

শুনুন চীনা একটা প্রবাদ আছে ‘’ উত্তেজিত মস্তিষ্ক কখনো সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারে না’’ তাই কোন সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে আগে রাগ কমিয়ে তারপর নিতে হয়।

আচ্ছা আপনি কি কাল আসবেন...???

নেহাঃহম আসবো আপনার পিংক কালারের বিষের টাকা দেওয়ার জন্য।

সিয়ামঃ ওকে যেহেতু পিংক কালারের বিষ খাওয়াতে পারি নাই।তাহলে আপনাকে পিংক কালারের ফুসকা খাওয়াবো।

 

নেহা কথা শুনে হেঁসে ফেললো।

নেহাঃ ওকে তাইলে একটা শর্ত আছে,আমি পিংক কালারের ড্রেস পরোব,সাথে আপনিও পিংক কালারের সার্ট পড়বেন।

সিয়ামঃ কি যন্ত্রণা ...।।

পিংক কালার মেয়েদের কালার ।আর এই কালারের কোন সার্ট নাই।

নেহাঃ বা রে আপনি বললেন আমি সুন্দরী আর সুন্দরী মেয়ের এই আবদার টা রাখবেন না।নাই তো কি হয়েছে বানিয়ে নিবেন।

সিয়ামঃ এখন রাত ২ টা।কাল কখন আমি মার্কেট যাবো আর কখন বানাবো।

নেহাঃ ওকে তাইলে পিংক কালারের যেকোন একটা কিছু আপনার সাথে থাকলেই হবে।

সিয়ামঃ ওকে তা থাকবে।

তবে আপনাকে স্বাগতম জানানোর জন্য ফুল থাকবে,তবে দয়া করে পিংক কালারের ফুল চাইবেন না।

নেহা হেঁসে চলছে এক নাগাড়ে।

 

কথা বলতে বলতে ভোর ৫ টা বেজে গেল।

তবুও যেন কথা শেষ হওয়ার না।

ফোন রাখার পরে ঘুমাইতে গেল দুইজন।

সকাল হয়ে যাচ্ছে তবুও ঘুম দুইজনের চোখে।

কথা হয়েছে বিকাল ৫ টার সময় দেখা হবে।

নেহা আসবে পিংক কালারের বিষের দাম মেটানোর জন্য।

 

সিয়াম নেহা নামক দুই মানব-মানবী নতুন কোন স্বপ্নের পথে।

 

সিয়াম ফুল হাতে দাঁড়িয়ে আছে।

ঘড়ির কাটার সময় যেন কিছুতেই যাচ্ছে না।

৪ টা ৫৩ মিনিট।

প্রতিটি মিনিট যেন ঘন্টার মত।

এর মাঝে ৪ বার ফোন দিয়েছে।

 

দূর থেকে সিয়াম দেখতে পেলো ,

রিক্সাতে পিংক কালারের ড্রেস পরে কেউ একজন আসছে।

মুখ টা বোঝা যাচ্ছে না।

একটু কাছে আসতেই দেখতে পেলো নেহা।

সিয়াম কি বলবে...?

অনেক কথাই বলা হয়নি।

 

রাস্তার ওপারে নেহা রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে এপারে আসতেছে।

সিয়াম দেখতে পেলো নেহা সত্যি সত্যি পিংক কালারের ড্রেস কপালে পিংক কালারের টিপ পড়েছে।

 

সিয়াম ভাবলো এইবার তো তার জন্য পিংক কালারের একটা কাজী অফিস খুঁজা লাগবে।ঐ কথাটা নেহা বলতে লাগল পিংক কালারের একটা কাজী অফিসে তারা বিয়ে করবে, নেহা বলে উঠল দূর পাগল পিংক কালারের কাজী অফিস লাগবেনা আমার, যে কোন একটা অন্য কালারের হলেই চলবে। আর -হ্যাঁ আমি আপনাকে পিংক কালারের মানুষ বানিয়ে রাখতে চাই আমার জীবনে। আপনাকে এতদিন যেভাবে জেনেছি ঐভাবে থাকা লাগবে পিংক কালারের মানুষ হয়ে।

 

এভাবে চলতে লাগল... দুই জন পাগল আর পাগলির পিংক কালারের জীবন কাহিনী ।

 

আর যারা গল্পটা পড়েছেন তাদের জন্য রইল এতগুলা পিংক কালারের ভালোবাসা।

Post a Comment

0 Comments